অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Saturday, August 31, 2019

রম্যরচনা-মলয়েন্দু মজুমদার-ভালবাসার কাঁঠাল প্রীতি


ভালবাসার কাঁঠাল প্রীতি

মলয়েন্দু মজুমদার



গ্রামের বাড়ি থেকে পালিয়ে ননী বিয়ে করে পাড়ারই মেয়ে শিখাকে। বাড়ির লোক যাতে খুঁজে না পায়, তাই স্টাফ কোয়ার্টারের সেলাই বাড়িতে এক কামরার একটি ঘর ভাড়া নেয় ননী। শিখার তিনকূলে কেউ নেই। মা-বাপ মরা মেয়েটি কোন্‌ ছোটবেলায় পিসির হাত ধরে ওপার বাংলা থেকে এসে হরিণঘাটায় পিসির এক ভাই-এর বাড়িতে ওঠে। সেই পিসিও আজ আর নেই। পিসি গত হয়েছে তাও বছর তিনেক হল।  দূর সম্পর্কের এই মামার বাড়িতে সে থাকছে তাও আজ প্রায় ষোল বছর, বিনিময়ে সারাদিন গাধার খাটুনি খাটতে হয় আর উপরি পাওনা মামির আলঙ্কারিক গঞ্জনাশিখা পালিয়ে যাওয়ায় এই জগৎ সংসারে কারুর কিছু যায় আসে না শুধুমাত্র মামার একটি কাজের লোকের প্রয়োজন হবে, এই যা ! পাড়ার ছেলে ননীর খুব মায়া হয় শিখাকে দেখলে। একদিন সন্ধ্যে বেলায় শিখা রাস্তার টিউবয়েলে জল আনতে গেছে। আশেপাশে কেউ নেই দেখে, সাহস করে নিজের মনের কথা শিখাকে বলে ননীকাঠবেকার ননীর প্রস্তাব শিখার মন্দ লাগে না। এই প্রথম কেউ তাঁকে ভালবেসে কথা বললে। এভাবেই শুরু, অতঃপর পালিয়ে বিয়ে করে উড়ে হাবড়ার ভাড়া করা বাসায়।

এতদিনে শিখা নিজের বলে কাউকে পেল। অসীম আনন্দে ডুবে আছে সে। ননী রোজগারপত্র করে কিনা, করলে কি কাজ করে সে এসব কিছুই জানেনা। অনেক সকালে বেড়িয়ে যায় ননী, ঘরে ফেরে সন্ধ্যেবেলা। নিয়ে আসে কখনো সিঙ্গাড়া ,মুড়ি কখনো বা চপ, মুড়ি -এভাবেই চলছিল। জ্যৈষ্ঠ মাস শেষ, চারিদিকে আম-কাঁঠালের গন্ধ। শিখার খুব হরিণঘাটার মামা বাড়ির কথা মনে পড়ছে। বাড়ির সামনের কাঁঠাল গাছটার কাঁঠালগুলো কি মিষ্টি ! মনে পড়তেই শিখার চোখে জল এসে গেল। রাতে শুয়ে শুয়ে অনেক কষ্টে ননীকে তার কাঁঠাল প্রীতির কথা জানায় শিখা। তারপর প্রায় দিন দুয়েক ননী অনেক রাত ক’রে ঘরে ফেরে। জিজ্ঞাসা করলে বলে কাজ ছিল। এভাবেই চলছিল রথের মেলা পর্যন্ত।



রাত প্রায় তখন তিনটে, চিরঞ্জীব প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে বাইরে যাবে। জানলা খুলে একটু বাইরেটা বোঝার চেষ্টা করছে, তারপর বাইরের আলো জ্বালাবেচতুর্দিক নিঃশব্দ, রাস্তার লাইটের আলোয় সে দেখতে পায়, কিছু একটা বাড়ির দিকে ঢুকছে আবার এদিক ওদিক দেখছে। সতর্ক হয়ে ওঠে চিরু মানে চিরঞ্জীব। ফিসফিস করে দাদা, সঞ্জীবকে ঘুম থেকে ডেকে ওঠায়চিরুদের বাড়িটা রাস্তা থেকে অনেকটা ভিতরে কিন্তু ওদের পাশের বাড়ি কিংবা সামনের বাড়ি গুলো রাস্তার যথেষ্ট কাছে বাড়ীর দুই পাশে ও পিছনে অনেক বড় বড় গাছপালা, সামনে রাস্তার দিকেও বেশ কয়েকটি গাছপালা আছে।  একারনেই বেশী রাতে চিরুর একটু ভয় – ভয় করে। রাস্তার লাইটের আলোয় চিরুরা দেখতে পায় একটি মানুষের ছায়া কাঁঠাল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে। কেমন যেন ভয় করতে লাগল তাঁদের। চিরুর আবার ভীষন ভূতের ভয়। সে দাঁত চেপে বলে ওঠে, ভূ—ত! ইশারায় কথা বলতে নিষেধ করে সঞ্জীব। সঞ্জীব তুলনায় একটু সাহসী। এইদিকে চিরু আর বাইরে না গিয়ে থাকতে পারছে না, প্রবল চাপ সামলাতে পারছে না সে। ঘরেই না হয়ে যায় শেষ পর্যন্ত।  হঠাৎ সঞ্জীব জানলাটা বন্ধ করে দেয় এবং বলে ওঠে “দাঁড়া কাঁঠাল চুরি করবি, এত সাহস!”   আমার সব কটা কাঁঠাল গুনে রাখা আছে। চোর! বলে ওঠে চিরু। চোর তো বটেই, গভীর রাতে একা অন্যের বাড়িতে নিশ্চই সাধু আসবে না !  তবে আপাতত একজনকে দেখতে পাচ্ছি, হয়ত দলবল আড়াল থেকে নজর করছে। চিরু আর সঞ্জীব বাড়ীর পিছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে আসে। দুজনের হাতেই কিছু আছে, যদি ওরা দলে ভারী হয় তবে নিজেদেরকে বাঁচাতে হবে তো নাকি ! দাদাকে পাহারায় রেখে এক নিঃশ্বাসে জরুরি কাজটি সেরে নেয় চিরু। তারপর অতি সন্তর্পণে দুজনে দুদিক থেকে গিয়ে কাঁঠালসহ চোরটিকে জাপটে ধরে। চিরুর হাতে ছিল দরজার খিল, সঞ্জীব চোরটিকে জাপটে ধ’রে চিৎকার করতে থাকে। হাতের খিল দিয়ে চিরু চোর বাবাজির পিঠে সজোরে আঘাত করে। “বাবাগো! “ বলে আর্তনাদ করে ওঠে চোরটি। আর্তনাদ ও চিৎকারে পাড়া প্রতিবেশীদের ঘুম ভেঙে যায়। সামনের বোসদের বাড়ি থেকে অশোক, খোকন, তপনরা তিন ভাই ঘুমচোখে দৌড়ে বেড়িয়ে আসে। পাশের বাড়ির চিরুর জ্যাঠতুত ভাইরা বেড়িয়ে আসে। ঐসময়টা সবার ঘুমই ভেঙে যায় চোরের আর্তনাদ ও চিরুর চিৎকারে। সুযোগ পেয়ে সব্বাই হাতের সুখ করে নেয়। এমতাবস্থায়, বোসদের বড় ভাই, অশোক, সবাইকে নিরস্ত করতে ময়দানে অবতীর্ণ হয়।



একটা ছেলে আজকের দিনে কাঁঠাল চুরি করবে, সেটা ভাবা যায় ! ততক্ষণে সূর্যদেব প্রায় দর্শন দিতে শুরু করবেন পাড়ার লোকের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। কোথাকার ছেলে?  কী ভাবে ধরা পড়লো ? অফুরান প্রশ্ন – উত্তর পর্ব চলছে।  ছেলেটির সাথে কথা বলে জানা যায়, তাঁর সদ্য বিবাহিতা বউ খুব সাধ করে কাঁঠাল খেতে চেয়েছে।  কিন্তু কাঁঠাল কিনতে অসমর্থ ননীর চুরি করা ব্যতীত উপায় ছিল না। বেশ কয়েকদিন ঘুরে দেখার পর এই গাছের কাঁঠাল গুলোই তাঁর মনে হয়েছে যে তুলনামূলক সহজে চুরি করা যেতে পারে।  “দ্যাখ, ছেলেটা অনেক পিটুনি খেয়েছে শুধুমাত্র একটা কাঁঠালের জন্য। ওর নববিবাহিতা বউটিও হয়ত সারারাত অপেক্ষায় আছে। ওকে ছেড়ে দেওয়াই উচিৎ হবে। “ ব’লে ওঠে অশোক। চিরুদের বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত ঐ কাঁঠালটিই ননীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। ননীকে প্রতিজ্ঞা করানো হয়, জীবনে আর কক্ষনো সে চুরি করবে না।



 Back To Index





























ঐতিহাসিক কাহিনী-অর্হৎ-সিলভিয়া ঘোষ


অর্হৎ


সিলভিয়া ঘোষ




সঙ্ঘের আর পাঁচটা কক্ষের  পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যে অনুভূতি হয় সে অনুভূতি সম্পূর্ণ বদলে যায় এই বিশেষ কক্ষটির পাশ দিয়ে  যেতে  যেতে।  একথা গত পাঁচ বছর ধরে লক্ষ্য করেছেন আনন্দ। তিনি আরও লক্ষ্য করেছেন শুধু মাত্র তাঁর এমনটা হয় তা নয় পুরো সঙ্ঘের সকল সদস্যদের মধ্যেই এধরণের অনুভব সৃষ্টি হয় একথা হাবে ভাবে সকল স্তরের সদস্যদের কাছ থেকেই তিনি শুনেছেন।
কক্ষটি মূল সভা গৃহের  ঠিক বাম পাশে অবস্থিত।  তার  ঠিক উল্টো দিকের কক্ষটি অমিতাভর। এই কক্ষ থেকে নির্গত   ধূপ ধূনার  ধুম্র   অসংখ্য বেলজুঁই , চাপা ইত্যাদি ফুলের সুগন্ধি মিষ্ট বাতাস ধাক্কা খায় অমিতাভর কক্ষে।  তাঁকেও যেন এই সুগন্ধি স্পর্শ করে থাকে বা বলা যায় ঘিরে থাকে এক অদৃশ্য রক্ষা কবচ  হিসেবে একথা বুদ্ধ নিজে মুখে না বললেও আনন্দ  আড়াল থেকে এর  সবটা অনুধাবন করেছেন। মনে মনে তিনিও সঙ্ঘের বয়ঃজ্যেষ্ঠা সদস্যা কে একবার অকপট প্রণাম জানিয়ে দেন। আনন্দ বুঝতে পারতেন সঙ্ঘ আর কিছু দিনের মধ্যেই একটি অতি আশ্চর্য জিনিষের অবগুণ্ঠন মুক্ত  হতে দেখবে।

ভরা সভাগৃহে গৌতম এসে বসেছেন। একে একে জমায়েত হয়েছেন সঙ্ঘের বাকী সদস্যরা। আজ গৌতম একটা অন্য ধারার  গল্প বলে শিক্ষা দেবেন ঠিক করেছেন। সেই মতো সভা তৈরি হয়েছে কিন্তু  সভা শুরুর সাথে সাথে  প্রত্যেকের  নাকে আসতে থাকে ঠিক সেই  কক্ষের ভিতর  থেকে আসা সুগন্ধি।
অমিতাভ তার  নিমীলিত আঁখি খুলে চেয়ে দেখেন  সামনে এসে দাঁড়িয়ে প্রধানা ভিক্ষুণী বদ্দকাচনা।
প্রধানা ভিক্ষুণী  জীবনের থেকে অবসর  নিতে চান। নির্বাণ পেতে চান   অমিতাভ জানেন আটাত্তর বছরের বর্ষীয়ান প্রধানা ভিক্ষুণী বদ্দকাচন্না যে জ্ঞান এই  বছরে পেয়েছেন  তা  তাঁর সঙ্ঘের আর মাত্র তিনজন জানেন। তাঁকে তো কোনদিন  সকলের সামনে এমন ভাবে আসতে দেখেন নি। আজ যখন ভরা সভায় তাঁকে পেয়েছেন তখন তাঁর  লব্ধ জ্ঞানের একটা পরীক্ষা নিলে কেমন হয়। সঙ্ঘ জানুক ভিক্ষুণী বদ্দকাচন্না কেমন তপস্বী। ভরা সভায় অমিতাভ তাঁকে আদেশ দিলেন তাঁর  কঠিন তপস্বায় লব্ধ জ্ঞানের কিছু তুলে ধরতে।

ভিক্ষুণী বদ্দকাচন্না তার আটাত্তর বছরের শরীরের মাটির ভাগ কে বদলে দিলেন জলে আর শরীরের বায়বীয় ভাগ কে বদলে দিলেন তেজে। এই সমগ্র  ক্রিয়া কলাপ টি করতে যে পরিমাণ  শক্তি একাগ্রতার প্রয়োজন তা বৃদ্ধার  শরীরে তখনও বর্তমান। এর পর বুদ্ধের একটি অনুরোধে  বদ্দকাচনা  অতীতের সাত জন্মের  জাতিষ্মরের গল্প শোনালেন সঙ্ঘের সকল সদস্য কে। আবার সঙ্ঘের কারোর কারোর জীবনে সুদূর ভবিষ্যতের কথা তিনি বলে দিলেন এক নিমেষে।  সঙ্ঘ এটিও জানলো ভিক্ষুণী  বদ্দকাচন্না পূর্ব জন্মে ছিলেন সুমিধা ব্রাহ্মণী যিনি পরবর্তী  জন্মে বুদ্ধের তথা সিদ্ধার্থের স্ত্রী যশোধরা। সাত জন্ম  ধরে তিনিই  বুদ্ধের সঙ্গনী নির্লিপ্তনীরব, নিভৃতে থাকা তপস্বী   অর্হৎ  যশোধরা


কাল্পনিক পরিবেশে তৈরি একটি ঐতিহাসিক কাহিনী
তথ্য সূত্রঃ মহুয়া ব্যানার্জী

Back To  Index


















Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান