জীবন জীবনের জন্য
Sketch : Godhuli Roy, Photo : icwow, Collage: Swarup Chakraborty |
অনেকদিন পর আজ শ্রীমতি বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। এখন বেরোতেই
ইচ্ছা করে না। কি যে হয়েছে,রাজ্যের আলসেমি। কয়েকদিন
ধরেই অর্কদের বাড়ি যাবে ভাবছে,আজ সেকারণেই বিকেলে বেড়িয়ে
রাস্তায় পরিচিত দু-একজনের সাথে কুশল বিনিময়,ইত্যাদি
বাক্যালাপে চলতে চলতে পৌঁছে গেল গন্তব্যে। একবার বেরোলে মন্দ লাগে না, আসলে হুটহাট করে বেরোবার অভ্যাসই
নেই।
অর্ক সাইকেল নিয়ে গেট খুলে
বেরোতে গিয়েই শ্রীমতিকে দেখে ভিতর দিকে ফিরে চ্যাঁচালো
"মা, কাকীমা এসেছেন"।
"আড্ডা দিতে যাচ্ছিস" ? সহাস্য প্রশ্ন শ্রীমতির।
না,কাকীমা। হায়ার সেকেন্ডারির পর
সব ছড়িয়ে গেছি, আর রোজ দেখা হয়না বন্ধুদের সাথে। রাতুলের কি খবর ? এত ব্যস্ত যে একটুও যোগাযোগ করেনা!
বলবো, তোদের ব্যাপার তো!!
হাসতে হাসতে বলার মাঝে অর্কর মা কাকলির সহাস্য আমন্ত্রণ
" এসো, এসো-বাব্বা, মনে পড়েছে তাহলে! এসো, ভিতরে এসো"।
মা, কাকীমা বেরোলাম।
আয়, কাকলি ,তাড়াতাড়ি
ফিরবি;ততক্ষণে অর্ক চোখের বাইরে।
গেট দিয়ে ঢুকেই শ্রীমতির ব্যাকুল
চোখ চলে গেল স্বর্ণচাঁপা গাছের দিকে, সেদিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললো "তোমার তো খুব মনে
পড়ে"। কাকলি আবারও বললো "এসো, ভিতরে এসো "।আজ শনিবার,অর্কর
বাবা বাইরের ঘরে বসা, ঢুকতেই স্মিত হাসলেন। ভদ্রলোক রাশভারী নন, মৃদুভাষী। নানান সামাজিক কাজে
ব্যস্ত থাকেন কিন্তু দেখা হলে মৃদুহাসি উপহার দিতে ভোলেন না। কাকলি ওকে ডাইনিং-এ
এনে বসালো।ফ্যানটা খুলে দিয়ে রান্নাঘরে যেতে যেতে বললো "আমার তো আর শনি-রবি
নেই, আমার সৌভাগ্য আজ উনি বাড়ি আছেন "। শ্রীমতি ঈষৎ হেসে
বললো "ইসস্, তবে তো ভুল দিনে এসে পড়েছি। এমন নিভৃতালাপের সুযোগ-" কাকলি হো হো করে হেসে বললো "ঠিক বলেছো, খুব অন্যায় করেছো-এখুনি বাবু
বের হবেন বুঝেছো!!!! দাঁড়াও, চা টা দিয়ে আসি "।
চা নিয়ে দুই বান্ধবী ডাইনিং
হলেই বসলো। স্ন্যাক্স ,কুকিজে সাজানো প্লেট, চা সামনে সাজিয়ে কাকলি বসলো
পাশে এসে। শ্রীমতি দেখে আঁতকে উঠে বললো " পাগল, এতসব ...", কাকলি মৃদু ধমক দিয়ে বলল
"খাওতো। এবার বলো ...."বলেই " এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো - ভালো লাগে না আর। এ বাড়ির
কেয়ারটেকার, এ আসছে,ও যাচ্ছে সারাক্ষণ শুধু ...., শ্রীমতি মনে মনে হাসলো, গৃহবধূদের নির্ধারিত জীবন
পঞ্জী। মুখে বললো " তোমার তো তাও রাতে একা থাকতে হয় না। সেভাবে হিসাব করলে
আমার তো অর্ধেকটা সময় একাই কাটলো!!"
-দাদা এখনও বাইরে যান ?
-আগের থেকে কম, এত কাজের চাপ! বাড়ি থাকলেও ফোনে বকে চলেছে, নিজেদের দরকারী কথাও বলতে পারি
না- বলেই হাসতে হাসতে বলে "
জানোতো , দাদাকে বলেছি তুমি বাইরে থাকলেই ভালো।
-কেনো!!! কাকলির বিস্ময়-তাড়িত কৌতুহল।
-বাইরে থাকলে তোমার দাদা নিয়ম করে দু-বার ফোন করবেই, বাড়ির চেয়ে বিদেশে থাকলে কথা
বলার সুযোগ পাই তাই "। দুই বন্ধু হাসতে থাকে। শ্রীমতির মন চঞ্চল, বলে চলো, বাইরে যাই।
-এখুনি যাবে নাকি !!
-না, একটু গাছটার কাছে যাবো।
-ওওও, মেয়ের সাথে দেখা করবে, বলে কাকলি হাসে।
স্বর্ণচাঁপা। গাছটা টবে প্রায়
তিন বছর ছিল। গাছের নেশা শ্রীমতি ও ওর স্বামীর দুজনেরই। ছাদেই শখ মেটায়, গাছটা মাটিতে লাগানোর কথা
সুদীপ বলতো কিন্তু জায়গা কোথায়! বাড়ির সামনে পিছনে যেটুকু জায়গা তাতে
পেঁপে, পেয়ারা ইত্যাদি প্রথম প্রথম লাগিয়েছিল, ফল হলো এই ফলন্ত গাছগুলো কাটা
গেল।আত্মীয়-বিয়োগ সম।একটা গাছ যখন উপকার করে তখন সে পারিপার্শ্বিকের সহায়ক
কিন্তু অবুঝ গাছ যখন পাতা ঝরায় তার সীমাবদ্ধতা মানে না,তখন সে প্রতিবেশীর প্রতিবন্ধক
স্বরূপ আর তাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য অগত্যা বৃক্ষ-ছেদন।একটা সরু লিকলিকে
নিমগাছ ছাড়া দিয়ে উঠেছে, সঙ্কুচিতের মতো ঝিরঝিরে পাতাসহ নয়নাভিরাম গাছটিকে জানেনা
বাঁচাতে পারবে কিনা। চাঁপা গাছটিকে বনসাই করার কথা কেউ কেউ বলেছিলো, তাতেও শ্রীমতির সায় নেই।
বনসাই করতে সে জানেও না, ভালোও লাগেনা। চারিদিকে মানসিক সংকীর্ণতা, উদারতার এমনিই অভাব। বামন
প্রকৃতির কালো ছায়া সর্বত্র, তার উপরে এক মহীরুহকে যতই দক্ষতা থাক বনসাই রূপ দিতে মোটেও
মন চায় না।সহজ স্বাভাবিক ভাবে যে বেড়ে ওঠে তার প্রকৃতিও সহজ,সরল হয়। যাই হোক, কাকলিকে কথায় কথায় একদিন
গল্প করাতে ও বলেছিল ওর বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গাটাতে ইচ্ছে হলে লাগাতে পারে।
শ্রীমতি খুশি হয়েছিল, ওর বাড়িতে না হোক্ ধরাতলে কোথাও তো আশ্রয় মিলবে, ছড়িয়ে দিতে পারবে ওর
শাখা-প্রশাখা-
, গভীর থেকে গভীরে প্রবেশ করবে
ওর শিকড় আর ওর সুবাসে আনন্দে ভরিয়ে দেবে আশপাশ।
তাই একদিন অর্কদের বাড়ির
সামনে গাছটা লাগিয়ে দিয়েছিল, মাটি মাতৃস্নেহে আশ্রয় দিলে গাছটি যেন প্রাণ পেলো, তরতর করে তার পিছিয়ে পড়াকে
এগিয়ে নিয়ে গেল। অর্ক এরমধ্যে একদিন গিয়ে বলে এসেছিল কাকীমা তোমার গাছে ফুল
ফুটেছে, মা যেতে বলেছেন। সেই থেকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছিল। কথা
বলতে বলতে দুজনে এসে গাছটার পাশে এসে দাঁড়াল।সন্ধ্যে হয়ে এসেছে, গাছটা নিঝুম দাঁড়িয়ে আছে যেন
চাপা অভিমানে বলতে চাইছে এতক্ষণে আমার কথা মনে পড়লো! আস্তে আস্তে গাছটার গায়ে
হাত বোলাতে বোলাতে শ্রীমতি বললো তোমরা ওকে প্রাণ দিয়েছো। কাকলি হাসে,সহাস্য মন্তব্য করে সেটা
ঘ্রাণে বুঝতে পারি। জানো, পথ চলতি অনেকেই দেখি গাছটার দিকে তাকিয়ে। নীচে একটা মলিন
ফুল কুড়িয়ে নিতে নিতে বলে "ফুল তোলো"?
ঐ দুটো চারটে তুলি কখনও। শ্রীমতি ভাবে স্বর্ণচাঁপা ফুলের
গোড়া বেশ শক্ত। মনে মনে বলে "রাগ করিস না মা। দৃঢ়তার সাথে বেঁচে থাক্।
মেয়েরা পরের বাড়ি যাবার জন্যই তো আসে। এভাবেই চারিপাশ সুন্দর করে, আলো করে রাখ্ মা! তোরা ভালো
থাকলে তবেই তো আমাদের বেঁচে সুখ। ফুলে-ফলে সবুজের সমারোহেই তো রয়েছে মানব জীবনের
সুস্থতার বার্তা। হঠাৎ মৃদু হাওয়ায় দুলে ওঠে পাতাগুলো, যেন বলতে চায় তোমরা ভালবাসলে
আমরা নিশ্চয়ই এই উষ্ণ পরিবেশে আনতে পারবো শীতলতার ছোঁয়া।
ভালো থাকবো সবাই।
অনেকদিন পর আজ শ্রীমতি বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। এখন বেরোতেই
ইচ্ছা করে না। কি যে হয়েছে,রাজ্যের আলসেমি। কয়েকদিন
ধরেই অর্কদের বাড়ি যাবে ভাবছে,আজ সেকারণেই বিকেলে বেড়িয়ে
রাস্তায় পরিচিত দু-একজনের সাথে কুশল বিনিময়,ইত্যাদি
বাক্যালাপে চলতে চলতে পৌঁছে গেল গন্তব্যে। একবার বেরোলে মন্দ লাগে না, আসলে হুটহাট করে বেরোবার অভ্যাসই
নেই।
অর্ক সাইকেল নিয়ে গেট খুলে
বেরোতে গিয়েই শ্রীমতিকে দেখে ভিতর দিকে ফিরে চ্যাঁচালো
"মা, কাকীমা এসেছেন"।
"আড্ডা দিতে যাচ্ছিস" ? সহাস্য প্রশ্ন শ্রীমতির।
না,কাকীমা। হায়ার সেকেন্ডারির পর
সব ছড়িয়ে গেছি, আর রোজ দেখা হয়না বন্ধুদের সাথে। রাতুলের কি খবর ? এত ব্যস্ত যে একটুও যোগাযোগ করেনা!
বলবো, তোদের ব্যাপার তো!!
হাসতে হাসতে বলার মাঝে অর্কর মা কাকলির সহাস্য আমন্ত্রণ
" এসো, এসো-বাব্বা, মনে পড়েছে তাহলে! এসো, ভিতরে এসো"।
মা, কাকীমা বেরোলাম।
আয়, কাকলি ,তাড়াতাড়ি
ফিরবি;ততক্ষণে অর্ক চোখের বাইরে।
গেট দিয়ে ঢুকেই শ্রীমতির ব্যাকুল
চোখ চলে গেল স্বর্ণচাঁপা গাছের দিকে, সেদিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বললো "তোমার তো খুব মনে
পড়ে"। কাকলি আবারও বললো "এসো, ভিতরে এসো "।আজ শনিবার,অর্কর
বাবা বাইরের ঘরে বসা, ঢুকতেই স্মিত হাসলেন। ভদ্রলোক রাশভারী নন, মৃদুভাষী। নানান সামাজিক কাজে
ব্যস্ত থাকেন কিন্তু দেখা হলে মৃদুহাসি উপহার দিতে ভোলেন না। কাকলি ওকে ডাইনিং-এ
এনে বসালো।ফ্যানটা খুলে দিয়ে রান্নাঘরে যেতে যেতে বললো "আমার তো আর শনি-রবি
নেই, আমার সৌভাগ্য আজ উনি বাড়ি আছেন "। শ্রীমতি ঈষৎ হেসে
বললো "ইসস্, তবে তো ভুল দিনে এসে পড়েছি। এমন নিভৃতালাপের সুযোগ-" কাকলি হো হো করে হেসে বললো "ঠিক বলেছো, খুব অন্যায় করেছো-এখুনি বাবু
বের হবেন বুঝেছো!!!! দাঁড়াও, চা টা দিয়ে আসি "।
চা নিয়ে দুই বান্ধবী ডাইনিং
হলেই বসলো। স্ন্যাক্স ,কুকিজে সাজানো প্লেট, চা সামনে সাজিয়ে কাকলি বসলো
পাশে এসে। শ্রীমতি দেখে আঁতকে উঠে বললো " পাগল, এতসব ...", কাকলি মৃদু ধমক দিয়ে বলল
"খাওতো। এবার বলো ...."বলেই " এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো - ভালো লাগে না আর। এ বাড়ির
কেয়ারটেকার, এ আসছে,ও যাচ্ছে সারাক্ষণ শুধু ...., শ্রীমতি মনে মনে হাসলো, গৃহবধূদের নির্ধারিত জীবন
পঞ্জী। মুখে বললো " তোমার তো তাও রাতে একা থাকতে হয় না। সেভাবে হিসাব করলে
আমার তো অর্ধেকটা সময় একাই কাটলো!!"
-দাদা এখনও বাইরে যান ?
-আগের থেকে কম, এত কাজের চাপ! বাড়ি থাকলেও ফোনে বকে চলেছে, নিজেদের দরকারী কথাও বলতে পারি
না- বলেই হাসতে হাসতে বলে "
জানোতো , দাদাকে বলেছি তুমি বাইরে থাকলেই ভালো।
-কেনো!!! কাকলির বিস্ময়-তাড়িত কৌতুহল।
-বাইরে থাকলে তোমার দাদা নিয়ম করে দু-বার ফোন করবেই, বাড়ির চেয়ে বিদেশে থাকলে কথা
বলার সুযোগ পাই তাই "। দুই বন্ধু হাসতে থাকে। শ্রীমতির মন চঞ্চল, বলে চলো, বাইরে যাই।
-এখুনি যাবে নাকি !!
-না, একটু গাছটার কাছে যাবো।
-ওওও, মেয়ের সাথে দেখা করবে, বলে কাকলি হাসে।
স্বর্ণচাঁপা। গাছটা টবে প্রায়
তিন বছর ছিল। গাছের নেশা শ্রীমতি ও ওর স্বামীর দুজনেরই। ছাদেই শখ মেটায়, গাছটা মাটিতে লাগানোর কথা
সুদীপ বলতো কিন্তু জায়গা কোথায়! বাড়ির সামনে পিছনে যেটুকু জায়গা তাতে
পেঁপে, পেয়ারা ইত্যাদি প্রথম প্রথম লাগিয়েছিল, ফল হলো এই ফলন্ত গাছগুলো কাটা
গেল।আত্মীয়-বিয়োগ সম।একটা গাছ যখন উপকার করে তখন সে পারিপার্শ্বিকের সহায়ক
কিন্তু অবুঝ গাছ যখন পাতা ঝরায় তার সীমাবদ্ধতা মানে না,তখন সে প্রতিবেশীর প্রতিবন্ধক
স্বরূপ আর তাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য অগত্যা বৃক্ষ-ছেদন।একটা সরু লিকলিকে
নিমগাছ ছাড়া দিয়ে উঠেছে, সঙ্কুচিতের মতো ঝিরঝিরে পাতাসহ নয়নাভিরাম গাছটিকে জানেনা
বাঁচাতে পারবে কিনা। চাঁপা গাছটিকে বনসাই করার কথা কেউ কেউ বলেছিলো, তাতেও শ্রীমতির সায় নেই।
বনসাই করতে সে জানেও না, ভালোও লাগেনা। চারিদিকে মানসিক সংকীর্ণতা, উদারতার এমনিই অভাব। বামন
প্রকৃতির কালো ছায়া সর্বত্র, তার উপরে এক মহীরুহকে যতই দক্ষতা থাক বনসাই রূপ দিতে মোটেও
মন চায় না।সহজ স্বাভাবিক ভাবে যে বেড়ে ওঠে তার প্রকৃতিও সহজ,সরল হয়। যাই হোক, কাকলিকে কথায় কথায় একদিন
গল্প করাতে ও বলেছিল ওর বাড়ির সামনের ফাঁকা জায়গাটাতে ইচ্ছে হলে লাগাতে পারে।
শ্রীমতি খুশি হয়েছিল, ওর বাড়িতে না হোক্ ধরাতলে কোথাও তো আশ্রয় মিলবে, ছড়িয়ে দিতে পারবে ওর
শাখা-প্রশাখা-
, গভীর থেকে গভীরে প্রবেশ করবে
ওর শিকড় আর ওর সুবাসে আনন্দে ভরিয়ে দেবে আশপাশ।
তাই একদিন অর্কদের বাড়ির
সামনে গাছটা লাগিয়ে দিয়েছিল, মাটি মাতৃস্নেহে আশ্রয় দিলে গাছটি যেন প্রাণ পেলো, তরতর করে তার পিছিয়ে পড়াকে
এগিয়ে নিয়ে গেল। অর্ক এরমধ্যে একদিন গিয়ে বলে এসেছিল কাকীমা তোমার গাছে ফুল
ফুটেছে, মা যেতে বলেছেন। সেই থেকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছিল। কথা
বলতে বলতে দুজনে এসে গাছটার পাশে এসে দাঁড়াল।সন্ধ্যে হয়ে এসেছে, গাছটা নিঝুম দাঁড়িয়ে আছে যেন
চাপা অভিমানে বলতে চাইছে এতক্ষণে আমার কথা মনে পড়লো! আস্তে আস্তে গাছটার গায়ে
হাত বোলাতে বোলাতে শ্রীমতি বললো তোমরা ওকে প্রাণ দিয়েছো। কাকলি হাসে,সহাস্য মন্তব্য করে সেটা
ঘ্রাণে বুঝতে পারি। জানো, পথ চলতি অনেকেই দেখি গাছটার দিকে তাকিয়ে। নীচে একটা মলিন
ফুল কুড়িয়ে নিতে নিতে বলে "ফুল তোলো"?
ঐ দুটো চারটে তুলি কখনও। শ্রীমতি ভাবে স্বর্ণচাঁপা ফুলের
গোড়া বেশ শক্ত। মনে মনে বলে "রাগ করিস না মা। দৃঢ়তার সাথে বেঁচে থাক্।
মেয়েরা পরের বাড়ি যাবার জন্যই তো আসে। এভাবেই চারিপাশ সুন্দর করে, আলো করে রাখ্ মা! তোরা ভালো
থাকলে তবেই তো আমাদের বেঁচে সুখ। ফুলে-ফলে সবুজের সমারোহেই তো রয়েছে মানব জীবনের
সুস্থতার বার্তা। হঠাৎ মৃদু হাওয়ায় দুলে ওঠে পাতাগুলো, যেন বলতে চায় তোমরা ভালবাসলে
আমরা নিশ্চয়ই এই উষ্ণ পরিবেশে আনতে পারবো শীতলতার ছোঁয়া।
ভালো থাকবো সবাই।