ঘর আপন আপন ঘর
সুবোধ চেঁচিয়ে স্ত্রীকে বলল 'কাল থেকে কিছুদিন অফিস বন্ধ সুজাতা, দেশের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়।' 'ও তাই বুঝি, আমার ভাল হল সকালে তাড়াহুড়ো করতে হবে না।' পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবনে সুজাতার বড় অনুযোগ ছিল স্বামী সবসময় অফিসের কাজে
ব্যস্ত, একদম ছুটি পায়না। বড় কর্পোরেট অফিসে চাকরি, উঁচু পদ। মুখ বুজে সব মেনে নেয় সুজাতা।
সুজাতা চা নিয়ে ঘরে ঢুকল, বলল 'ভালই হল, একসঙ্গে বসে চা খাওয়াপরে'।দু'দিন কেটে গেল সুবোধের শুয়ে ঘুমিয়ে। তিনদিনের দিন উঠে
বাইরে বেরলো। হাঁটতে হাঁটতে মোড়ের মাথায় পৌঁছনো। দু'জন ক্লাবের
ছেলে এগিয়ে এল, 'সুবোধদা অফিস ছুটি তো?
-“হ্যাঁ গো”।
-“বেরিয়েছেন যে? কিছু দরকার?”
-“না না রাস্তাটা দেখতে বেরোলাম”।
-“দয়া করে বাড়ি চলে যান, ঘর থেকে দেখুন”।
ছেলেদের উক্তি।
সুবোধ বাড়ি এল। সুজাতা বাসন মাজছে, তারপর রান্না করবে। কাজের দিদি আসছে না। দেখে সুবোধ ঘরে এল। সামনে একটা বই
খুলে ঝিমোতে লাগল।
খবরের কাগজ, টিভি র খবর শেষ। খাবার টেবিলে একজন ক্লান্ত একজন বসে বসে
বিরক্ত। বেশী কথা হল না।
একদিন পরে আবার সুবোধ বেরোল। দু'টো বাড়ীর পরেই অতীন বাবুর বাড়ী। ভাবল একটু গল্প করে আসি।অতীনবাবু বারান্দায়
বসা, গেটে তালা দেওয়া।
-“কি অতীন বাবু কি করছেন ?হাঁক দিল সুবোধ” ।
-“যা দু"একটা লোক যাচ্ছে
দেখছি”, অতীন বাবু উত্তর দিলেন।
-“চাবিটা একটু খুলুন, বসি”, সুবোধ বলল। বিব্রত মুখে অতীনবাবু বললেন, “চাবিটা খুঁজে পাচ্ছি না”।
বাড়ী ফিরল সুবোধ। দেখল বৌ বাসন
মেজে রান্না বসিয়েছে, মুখ গম্ভীর। সুবোধকে দেখে ফোঁস করে উঠল সুজাতা “রাস্তায়
না ঘুরে কড়াটা হাঁড়িটা একটু সাবান ঘষে দিতে পারতো”।
সুবোধ উত্তর দিল,“আমি কি ওসব পারি
নাকি!”
সেদিন একসঙ্গে লাঞ্চ খাওয়া হল না। ষষ্ঠদিনে
অশান্তির মেঘ কালো হয়ে উঠল। সুজাতা মাকে ফোন করল “মা আমাকে নিয়ে যাও”।
মায়ের উত্তর সুজাতার আশাপ্রদ লাগল
না। মা বলল “কি করে যাব? গাড়ীতো বন্ধ”, “তাছাড়া জামাইতো ভাল ছেলে, একটু বুঝে থাক মা”।
মনে মনে আর কখনো বাপেরবাড়ি যাবেনা
প্রতিজ্ঞা করল সুজাতা। পরে দিদিকে ফোন করল, “জামাইবাবুকে
বল আমাকে বাইকে করে তোর কাছে নিয়ে যাবে”।
দিদির
উত্তর, “ও বাবা! এখন বেরোলে
রাস্তায় পুলিশ ধরবে”।সুজাতা উকিলবাবুকে ফোন করল সুবোধকে ডিভোর্স করবে মনস্থ করে।
উকিলবাবু আশাব্যঞ্জক কিছু বললেন না। এখন নাকি কোর্টের কাজ হবে না। রেগে গিয়ে
সুজাতা সুবোধকে বলল “অগ্নি সাক্ষী করে সাতপাক ঘুরে তোমার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে, এই গ্যাসের সামনে এই পোড়া হাঁড়ি
কড়া ছুঁয়ে তোমায় ডিভোর্স দেব”।
ঐ কড়া আর সুজাতার হাত একসঙ্গে সুবোধ ধরল।
তারপর অনভ্যস্ত হতে কড়া আর সাবান কলের তলায় দিল।
তারপর থেকে ওদের অশান্তি আর কেউ
শোনেনি। এখন চা আর খাবার ওরা একসঙ্গেই খায়। মা, দিদি ফোন
করেছিল। সুজাতা বলেছে অফিস খুললে সুবোধ ওকে নিয়ে যাবে।
| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Lock-down Issue,2020 | April 2020 |হাসিরাশি সংখ্যা।
।নববর্ষ ১৪২৭| Third Year Fifth Issue |22nd Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |